ডেস্ক রিপোর্ট:
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কাল থেকে শুরু হওয়া সর্বাত্মক লকডাউনে আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী মাঠ পর্যায়ে ‘হার্ডলাইনে’ থাকবে। সর্বাত্মক লকডাউনে ডিএমপি বিভিন্ন ইউনিটের উপ-কমিশনাররা, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মকান্ড পরিচালনা করবেন। এমনও হতে পারে, প্রথমদিনেই গ্রেপ্তার ৫ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আজ বুধবার (৩০ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, ‘সর্বাত্মক লকডাউনে শপিং মল, কমিউনিটি সেন্টার, মার্কেট, দোকানপাট-সব বন্ধ থাকবে। কাঁচাবাজারে এর আগে ভিড় দেখা গেছে। অলিগলির সমস্থ দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সে কারণে কাঁচাবাজার রাস্তায় এনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানো হবে। তবে কাঁচাবাজারে কেউ কোনো যন্ত্রচালিত গাড়িতে যাতায়াত করতে পারবেন না। প্রয়োজনে রিকশা ব্যবহার করতে পারবেন।’
কঠোর বিধিনিষেধের সময়ে গণমাধ্যমকর্মী ও প্রজ্ঞাপনে অনুমোদিত জরুরি সেবায় নিয়োজিতদের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সাংবাদিকসহ অনুমোদিত যারা বাইরে বের হবেন তারা যেন মাস্ক এবং আইডি কার্ড নিয়ে বের হন। তারা পরিচয়পত্র দেখানো সাপেে যন্ত্রচালিত যানবাহনে চলাচল করতে পারবেন।’
রিকশায় সংক্রমণের ঝুঁকি কম বলে তা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘মুভমেন্ট পাশের কোনো কার্যকারিতা নেই। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে পারবে না। শিল্পকারখানার মালিকেরা তাদের গাড়িতে চলতে পারবেন না, রিকশায় যেতে হবে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, অকারণে কেউ যদি ঘর থেকে বের হয় তবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হবে। তার বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ২৬৯ ধারায় মামলা দিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। আবার আদালতে না পাঠিয়ে মোবাইল কোর্ট দিয়ে তাদের তাৎণিক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
এই ধারায় সর্বোচ্চ ৬ মাসের জেল, অর্থদন্ড ও উভয়দন্ড হতে পারে বলে জানান কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘কেউ অকারণে বের হলে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো, প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ব্যবস্থা নেবো। অকারণে বের হলেই আইনি ঝামেলায় পড়তে হবে। যানবাহন ব্যবহার করলে মোটরযান আইনে ব্যবস্থা নেব।’
তিনি বলেন, ‘দন্ডবিধির ২৬৯ ধারা অনুযায়ী কেউ বাইরে বের হলে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো, তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হবে। যেটি আমরা এর আগে কখনও করিনি। এবারে আমরা এই অবস্থান পর্যন্ত যাব। আপনারা এমনও শুনতে পারেন ডিএমপি প্রথম দিন ৫ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করেছে। এবার আমরা অত্যন্ত শক্ত অবস্থায় থাকবো।’
ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, ‘ঢাকায় যেসব বাজার কাঁচাবাজার রয়েছে সেগুলোকে রাস্তার পাশে নিয়ে আসা হবে, যাতে মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজার করতে পারেন। খাবারের হোটেলগুলো শুধুমাত্র খাবার বিক্রির জন্য খোলা থাকবে, কেউ বসে খেতে পারবে না। এছাড়াও আমরা অলিগলির কোনো দোকান খোলা রাখতে দেবো না।’
আন্তর্জাতিক ফাইটের যাত্রীদের উদ্দেশ্যে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘যারা বিদেশ থেকে ফিরবে তাদের বহনের জন্য গাড়ি ব্যবহার করা যাবে। তবে আগত যাত্রীদের পরিবারকে আমরা অনুরোধ করবো, আপনারা গাড়ি দিয়ে বিমানবন্দরে না গেলেও চলবে। কারণ বিমানবন্দরে পার্কিংয়ে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক গাড়ি রয়েছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক ফাইটের যাত্রীদের রাস্তায় পুলিশকে প্লেনের টিকিট এবং পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে।’
কাব ও বারের বিষয়ে কমিশনার বলেন, ‘ঢাকা কাব হোক আর অফিসার্স কাব সব বন্ধ থাকবে। ঢাকার কোনো কাব খোলা থাকবে না।
ডায়াবেটিসের অনেক রোগী আছেন যারা প্রতিদিন পার্কে হাঁটতে যান, তারা কী করবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডায়াবেটিসের রোগীরা এমনিতেই সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকে, তাই আমি অনুরোধ করব তাদের, বাসার আশপাশের জায়গায় হাঁটাচলা করতে।’