১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরকে দখল করার লক্ষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা নবীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘাটি করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আক্রমণ চালায়। পাকিস্তানিদের একাধিক আক্রমণে নবীনগরের বিভিন্ন এলাকা ধ্বংস যজ্ঞে পরিনত হয়। উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নের গুড়িগ্রামে পাকিস্তানিদের প্রথম আক্রমণে মিরপুর গ্রামের শহীদ মিয়া পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর গুলিতে প্রথম শহীদ হন। এক এক করে নবীনগর উপজেলার অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা দেশমাতৃকার টানে শহীদ হন।
পরে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মূলঘাটি নবীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টিকে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিক থেকে ঘিরে সম্মুখ আক্রমণ চালালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অবস্থা বেগতিক দেখে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং সেইদিনই নবীনগর হানাদার মুক্ত হয়।
তবে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পাকিস্তানিদের গুলিতে উপজেলার কনিকাড়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবদুস সালম সরকার শহীদ হন। পরে তাকে নবীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশেই সমাহিত করা হয়। বর্তমানে বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুস সালাম সরকারকে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় দিবসে সম্মান জানানোর লক্ষে তার কবরটিকে পাককরণসহ নামফলকও বসানো হয়েছে। কিন্তু অতি পরিতাপের বিষয় স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পরও বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ মোহাম্মদ আবদুস সালাম সরকারের কবরের নামফলকে বাংলাদেশ-জিন্দাবাদ লেখাটি সংশোধন করা হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
এ ব্যাপারে নবীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু মোছা জানান…..
মহান মুক্তিযুদ্ধে নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের খাড়ঘর এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৩জন সাধারণ জনগণকে রাতের আধারে নির্মমভাবে হত্যা করে, এবং সবাইকে একসাথে গণকবর দেয়া হয়। যা মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাসে নবীনগরের জন্য সবচাইতে আলোচিত ঘটনা। বর্তমানে সেখানে সেইসকল শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে ‘চেতনা-৭১’ নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এছাড়াও নবীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় গণকবরে নির্মিত হয়েছে ‘স্মৃতি অণির্বান’ নামে আরো একটি স্মৃতিস্তম্ভ এবং পৌর এলাকার আলীয়াবাদ সিএনজি ষ্টেশন এলাকায় বীরমুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত হয়েছে ৫তলা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সটির পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বীরসেনানীদের স্মরণে আরো একটি স্মৃতিস্তম্ভ।
ভবিষ্যতে উপজেলা বিভিন্ন সড়ক শহীদ হওয়া বীরমুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণ করা হবে উল্লেখ করে উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির বলেন…..