ফুটবল বিশ্বকাপ জ্বরে ভুগছে এখন গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশও এর বাইরে না। আর মাত্র ৩দিন পরেই পর্দা উঠতে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ -২০২২ এর। মধ্য প্রাচ্যের দেশ কাতারে অনুষ্ঠিতব্য এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে ইতিমধ্যে প্রায় সব দেশেই চলছে ভক্তদের নানান কার্যক্রম।
প্রতিবারের বিশ্বকাপেই এর ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রিয় দলের প্রতি ভালবাসার বহিপ্রকাশ করেছেন ভক্তরা। তেমনি স্ত্রীর জমানো টাকা এবং শখের আম বাগান বিক্রী করে প্রায় ৪ কিলোমিটার দণি কোরিয়ার পতাকা টানিয়ে সাড়া ফেলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আবু কাউসার মিন্টু।
আসন্ন ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে প্রিয় দলের প্রতি সমর্থন জানাতেই তার এ উদ্যোগ। দীর্ঘদিন কোরিয়া থাকার সুবাধে ভালবাসার নিদর্শন হিসেবেই মিন্টু ও তার স্ত্রীর যৌথ অর্থায়নে পতাকাটি তৈরী করা হয়। বিশাল এ পতাকা দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ভীড় করছেন ক্রীড়ামোদীরা।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কালনা গ্রামের আবুল হাশেমের ছেলে আবু কাউসার মিন্টু। ৯৮ সালে তিনি জীবিকার তাগিদে দণি কোরিয়ায় যান। সেখানে থাকার সুবাধে জীবনের প্রথম কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০০২ সালের বিশ^কাপ খেলা দেখেন। সে সময় কোরিয়ার খেলায় মুগ্ধ হন তিনি। এরপর থেকে কোরিয়ার একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিণত হন।
২০০৬ সালে দেশে ফিরে পার্শ্ববর্তী তেজখালী গ্রামের সাবিনা বেগমকে বিয়ে করেন মিন্টু। পরে স্বামীর মুখে কোরিয়ার গল্প শুনে তিনিও কোরিয়ার একনিষ্ঠ ভক্তে পরিণত হন। ভালবাসার নিদর্শন হিসেবে দুই সন্তানের জনক মিন্টু ২০১৮ সালেও ঢাকার এয়ারপোর্ট ফাইওভারে ১ হাজার ফুট লম্বা কোরিয়ার পতাকা টানান।
আসন্ন বিশ্বকাপে নিজ বাড়ি দরিয়াকান্দি ইউনিয়নের কালনা গ্রাম থেকে শ্বশুড় বাড়ি তেজখালী ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার লম্বা দণি কোরিয়ার পতাকা টানান। পতাকাটি তৈরী করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। স্ত্রীর সঞ্চিত টাকা ও আম বাগান বিক্রী করে তিনি এই পতাকা তৈরী করার কাজ করেন। তার তৈরী করা বিশাল পতাকা দেখে রীতিমতো হৈ চৈ পরে যায় প্রায় ১০ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুসিত গ্রামটিতে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন ছুঁটে আসছে এই পাতাকাটি দেখার জন্য। পতাকার সুবাধে ছোট্ট গ্রামটি এখন কোরিয়া গ্রাম নামে সবার মুখে মুখে স্থান পাচ্ছে।