ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামের বিয়ে বাড়ির গেটের ডিজাইনকে কেন্দ্র করে সীতারামপুর ও দৌলতপুর গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সীতারামপুর বাজারের প্রায় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরসহ ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এতে কোটি টাকার উপর মালামাল লুট করা হয়েছে বলে জানান তারা।
এর আগে ১৬ আগষ্ট মঙ্গলবার রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় দৌলতপুর ও সীতারামপুর গ্রামের লোকজনের মধ্যে রক্তয়ী সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ। বর্তমানে দুটি গ্রামে গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষ শূণ্য অবস্থায় রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে সীতারামপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত ১৬ আগষ্ট রাতে সংঘর্ষের সময় স্বর্ণের দোকান সহ অসংখ্য দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট চালানোর পাশাপাশি মোটরসাইকেল ও যানবাহনে করা হয়েছে অগ্নিসংযোগ । পুলিশ না থাকলে আবারো যে কোন সময় সংঘর্ষ হতে পারে ধারণ করছে স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানান, বাজারের প্রায় সব গুলি দোকানেই ভাংচুর ও দা দিয়ে কুপানো সহ দোকান গুলিতে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে হামলাকারিরা। বর্তমানে বাজারটি পুলিশের পাহারায় রয়েছে। এসময় তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। আমাদের দোকনপাট ভাংচুর করে লুট করে নিয়ে গেছে দৌলতপুর গ্রামের লোকজন। বিয়ে বাড়ির ঝগড়ার সাথে আমারা জরিত না থাকলেও আমাদের বাড়ি সীতারামপুর গ্রামে হওয়ায় আমাদের উপর এই অমানবিক হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এর কঠিন বিচার চাই। এ বিষয়ে দ্বায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সাথে কথা বলে যানা যায়, দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে আমরা এখানে অবস্থান করছি। এখন গ্রাম দুটির পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন আশরাফী জানান, গত সোমবার ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামের রিয়াজুদ্দিন গোষ্ঠীর রাজুর বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছিল। সেখানে ডেকোরেশনের কাজ করেন দৌলতপুর গ্রামের হাসান আলী বাড়ির এক ছেলে। ডেকোরেশনের গেইটের ডিজাইনের কাজ পছন্দ হয়নি বিয়ে বাড়ির লোকজনের। এ নিয়ে দৌলতপুরের ডেকোরেশনের ছেলেটির সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটির ও ধস্তাধস্তি হয়।পরে বিষয়টি মীমাংসা করতে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের এক জায়গায় উভয় পকে নিয়ে শালিস সভায় বসা হয়। সেখানে আমিও ছিলাম। এরই মাঝে সন্ধ্যার পর খবর আসে একদিন আগে ঘটে যাওয়া বিয়ে বাড়ির গেইটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দৌলতপুর ও সীতারামপুর গ্রামের দুই যুবক তর্কবিতর্ক থেকে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে দুই গ্রামবাসী মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় আহতের পাশাপাশি অনেক দোকানপাট ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো. সোহেল জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় ১০০ জনের নাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাত নামা আরো ৮শ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।