ডেস্ক রিপোর্ট:
নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন বা গাছ কাটা আইনত দÐনীয় অপরাধ। যদি তা হয় সরকারী বা অন্য কোনো ব্যাক্তির গাছ। কিন্তু নিজ মালিকানাধীন জমিতে নিজের লাগানো গাছ কেটে সাজা ভোগের ঘটনা বিরল। সম্প্রতি কুমিল্লার মুরাদনগরে এমনই এক বিরল ঘটনা ঘটেছে। যেখানে নিজের গাছ কেটে ২১ দিন ধরে হাজত খাটছেন আবু সাইদ নামে এক প্রবাস ফেরৎ ব্যাক্তি। তিনি একাই নন, সাথে তার ছোট ভাই মাওলানা আবুল খায়ের (মুিিজবুর) এবং ওই গ্রামেরই প্রয়াত আবদুর রৌফ এর ছেলে রাশেদ মিয়াসহ তিন জন! ঘটনাটি জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাংগরাবাজার থানাধীন রাজাবাড়ী গ্রামে। আবু সাইদ ও মাওলানা আবুল খায়ের ওই গ্রামের প্রয়াত আবদুল হামিদের (হামদু মিয়া) ছেলে।
ঘটনাটি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। আবু সাইদের স্ত্রী বলেন, নিজের ভ‚মি থেকে গাছ কাটার পরও আমার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে পরিকল্পিত ভাবে হাজত খাটানো হচ্ছে। মাওলানা আবুল খায়েরের স্ত্রী সালামা বেগম বলেন, আমার স্বামী দাউদকান্দিতে একটি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল। ওই দিন বাড়ীতেই ছিলেন না। তিনি সেদিন তার কর্মস্থলেই ছিলেন। প্রতিবেশি আবু ইউসুফ (আবন) ষড়যন্ত্র করে এই মামলা দিয়েছেন। রাশেদ মিয়ার বড় ভাই মাসুদ রানা বলেন, আমার ভাই রাশেদ একটি ঔষধ কোম্পানী বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নবীনগরে কর্মরত। সেদিন সে তার কর্মস্থলে ছিলো। তাকেও এই মিথ্যা অভিযোগে জড়িয়ে বিনা অপরাধে হাজত খাটানো হচ্ছে।
সরেজমিন খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, আবু সাইদ ও তার ছোট ভাই মাওলানা আবুল খায়ের ২০০৯ সালে তার চাচা আবদুল কাদির বেপারীর ছেলেদের কাছ থেকে ৮০৪ খতিয়ানভূক্ত ৩২৩৩ দাগে দুই শতক করে মোট চার শতক ভ‚মি ক্রয় করেন। দীর্ঘ ২৯ বছর প্রবাসজীবন শেষে চলতি বছরের শুরুতে দেশে আসেন আবু সাইদ। তিনি অবসর সময়টি বসে না থেকে দোকানটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর দোকান ঘরটির চারপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করেন এবং এখানে তাদেরই লাগানো কাঠের গাছগুলো ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীরা গাছগুলো পরে নেয়ার লক্ষ্যে কেটে ফেলে রেখে যান। এই সুযোগে প্রতিবেশি আবু ইউসুফ (আবন) এই গাছ তার উল্লেখ করে গোপনে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় গত ০১ নভেম্বর আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে বিচারক তাদের তিন জনকে জামিন না মঞ্জুর করে জেলা হাজতে পাঠান।
উক্ত মামলায় বিবাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট এএইচএম আবাদ এবং এডভোকেট আবদুল কাইয়ুম চিশতী জানান, বর্তমানে মামলাটি জামিন শুনানীর জন্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রয়েছে।
আবু সাইদের স্ত্রী রতœা বেগম এবং আবুল খায়ের এর স্ত্রী সালমা বেগম জানান, বাড়ীতে পুরুষ না থাকায় আবু ইউসুফ আবনের মামাতোভাই কামালসহ সাঙ্গপাঙ্গরা প্রতিনিয়তই এসে তাদের বাড়ীতে রাতদিন হুমকী ধমকীতে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তারা পৃথক ভাবে থানা ও আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাংগরাবাজার থানার সাব ইন্সপেক্টর শাহনেওয়াজ বলেন, আমি আদালতের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সাক্ষ্য প্রমাণাদি নিয়ে দেখা গেছে উল্লেখিত ভ‚মিতে আবু সাইদ ও আবুল খায়েরের দখল বিদ্যমান। এমতাবস্থায় উভয় পক্ষকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নোটিশ দিয়েছি এবং এ মর্মে আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছি।
ভিডিওসহ নিউজ দেখুন নিচের লিংকে…..